নবম শ্রেণীর ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর : শস্য চাষের জন্য মালভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলের ঢালু জমিতেসমােন্নতি রেখা বরাবর আল ও নালা (Ridge) তৈরি করা হয়। এর ফলে শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টির জল আলে বাধা।পেয়ে মৃত্তিকায় অনুপ্রবেশ করে এবং অধিক বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত জল নালার মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে যায়, এই শস্যায়নকে সমােন্নতি শস্যায়ন বলে। ঢালু জমিতে মৃত্তিকাকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করার অন্যতম পদ্ধতি হল এই সমােন্নতি শস্যায়ন।
নবম শ্রেণীর ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো
১. কাস্ট ভূমিরূপ যে আবহবিকারের ফলে ঘটে-
ক. জারণ
খ. অঙ্গারযোজন
গ. আর্দ্র-বিশ্লেষণ
ঘ. জৈবিক আবহবিকার
২. চুনাপাথরযুক্ত অঞ্চলে বেশি দেখা যায়-
ক. কার্বোনেশন
খ. হাইড্রেশন
গ. হাইড্রোলিসিস
ঘ. অক্সিডেশন
৩. মরুভূমি অঞ্চলে মৃত্তিকা ক্ষয় হয়-
ক. নদীর দ্বারা
খ. হিমবাহের দ্বারা
গ. বায়ুপ্রবাহের দ্বারা
ঘ. মানুষের দ্বারা
৪. যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলায় ঘটে-
ক. ভৌত পরিবর্তন
খ. রাসায়নিক পরিবর্তন
গ. উভয় প্রকার পরিবর্তন
ঘ. কোনো পরিবর্তন হয় না
৫. শিলার শুধুমাত্র আকৃতিগত পরিবর্তন যে আবহবিকারের ফলে ঘটে, সেটি হল-
ক. জৈবিক আবহবিকার
খ. যান্ত্রিক আবহবিকার
গ. জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার
ঘ. রাসায়নিক আবহবিকার
৬. বৃষ্টিবহুল ক্রান্তীয় অঞ্চলে দেখা যায়-
ক. যান্ত্রিক আবহবিকার
খ. রাসায়নিক আবহবিকার
গ. জৈবিক আবহবিকার
ঘ. কোনোটিই নয়
৭. বিষমসত্ত্ব শিলায় যে ধরনের আবহবিকার ঘটে তা হল-
ক. বিচূর্ণন
খ. বোল্ডার ভাঙন
গ. শল্কমোচন
ঘ. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
৮. মৃত্তিকাক্ষয়ের একটি মনুষ্যসৃষ্ট কারণ হল-
ক. জলপ্রবাহ
খ. কৃষিকার্য
গ. শিকড় বৃদ্ধি
ঘ. মাটিতে গর্ত সৃষ্টি
৯. উষ্ণ মরুভূমিতে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রধান প্রক্রিয়াটি হল-
ক. লবণ কেলাস গঠন
খ. তুষার খণ্ডীকরণ
গ. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
ঘ. প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরণ
১০. বিষমসত্ত্ব শিলায় যে ধরনের আবহবিকার ঘটে তা হল-
ক. বিচূর্ণন
খ. বোল্ডার ভাঙন
গ. শল্কমোচন
ঘ. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
১১. পাহাড়ি অঞ্চলে শিলাচূর্ণের চলনকে বলে-
ক. যান্ত্রিক আবহবিকার
খ. রাসায়নিক আবহবিকার
গ. পুঞ্জিত ক্ষয়
ঘ. নগ্নীভবন
১২. যান্ত্রিক ও রাসায়নিক উভয় আবহবিকার বেশি হয়-
ক. শীতল নাতিশীতোয় অঞ্চলে
খ. উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে
গ. নিরক্ষীয় অঞ্চলে
ঘ. মরু অঞ্চলে
১৩. শল্কমোচন প্রক্রিয়াটি হয়-
ক. ব্যাসল্ট শিলায়
খ. গ্রানাইট শিলায়
গ. বেলেপাথরে
ঘ. কাদাপাথরে
১৪. মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায়ে সৃষ্টি হয়-
ক. সোলাম
খ. রেগোলিথ
গ. ব্যাথোলিথ
ঘ. কনোলিথ
১৫. ধাপচাষ অধিক দেখা যায়-
ক. পার্বত্য অঞ্চলে
খ. মরুভূমিতে
গ. সমভূমিতে
ঘ. উপকূলে
১৬. মরুভূমি অঞ্চলে মৃত্তিকা ক্ষয় হয়-
ক. নদীর দ্বারা
খ. হিমবাহের দ্বারা
গ. বায়ুপ্রবাহের দ্বারা
ঘ. মানুষের দ্বারা
১৭. সমসত্ত্ব শিলার প্রস্তরখণ্ডে দেখা যায়-
ক. প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরণ
খ. শল্কমোচন
গ. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
ঘ. জৈবিক আবহবিকার
১৮. কাস্ট ভূমিরূপ যে আবহবিকারের ফলে ঘটে-
ক. জারণ
খ. অঙ্গারযোজন
গ. আর্দ্র-বিশ্লেষণ
ঘ. জৈবিক আবহবিকার
১৯. ভূপৃষ্ঠের শিলাগুলি যে পদ্ধতির মাধ্যমে চূর্ণবিচূর্ণ হয় তাকে বলে-
ক. ক্ষয়ীভবন
খ. নগ্নীভবন
গ. বিচূর্ণীভবন
ঘ. পুঞ্জিত ক্ষয়
২০. তুহিন খণ্ডীকরণে সৃষ্ট শঙ্কু আকৃতির শিলাচূর্ণকে বলা হয়-
ক. ট্যালাস বা স্ক্রী
খ. আর্গ
গ. পেডিমেন্ট
ঘ. বাজাদা
২১. রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে শিলায় মরচে পড়ার প্রক্রিয়া হল-
ক. জারণ
খ. কার্বোনেশন
গ. দ্রবণ
ঘ. আর্দ্র বিশ্লেষণ
২২. যে প্রক্রিয়ায় ক্যালশিয়াম কার্বনেট ক্যালশিয়াম বাইকার্বনেটে পরিণত হয়-
ক. জারণ
খ. অগারযোজন
গ. জলযোজন
ঘ. দ্রবণ
২৩. শিলার শুধুমাত্র আকৃতিগত পরিবর্তন যে আবহবিকারের ফলে ঘটে, সেটি হল-
ক. জৈবিক আবহবিকার
খ. যান্ত্রিক আবহবিকার
গ. জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার
ঘ. রাসায়নিক আবহবিকার
২৪. তুহিন-খণ্ডীকরণের ফলে সৃষ্টি শিলাখণ্ডগুলিকে বলা হয়-
ক. ট্যালাস
খ. পেডিমেন্ট
গ. লোয়েস
ঘ. বাজাদা
২৫. যান্ত্রিক ও রাসায়নিক উভয় আবহবিকার বেশি হয়-
ক. শীতল নাতিশীতোয় অঞ্চলে
খ. উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে
গ. নিরক্ষীয় অঞ্চলে
ঘ. মরু অঞ্চলে
২৬. হিউমাস সৃষ্টির পর্যায়টি হল-
ক. রেগোলিথ
খ. হিউমিফিকেশন
গ. খনিজকরণ
ঘ. এলুভিয়েশন
২৭. শল্কমোচন প্রক্রিয়াটি হয়-
ক. ব্যাসল্ট শিলায়
খ. গ্রানাইট শিলায়
গ. বেলেপাথরে
ঘ. কাদাপাথরে
২৮. যান্ত্রিক আবহবিকারের অন্যতম মাধ্যম-
ক. মাধ্যাকর্ষণ শক্তি
খ. অক্সিজেন
গ. শিলার কাঠিন্য
ঘ. উষ্ণতা
২৯. শিলার শুধুমাত্র আকৃতিগত পরিবর্তন যে আবহবিকারের ফলে ঘটে, সেটি হল—
ক. জৈবিক আবহবিকার
খ. যান্ত্রিক আবহবিকার
গ. জৈব-যান্ত্রিক আবহবিকার
ঘ. রাসায়নিক আবহবিকার
৩০. উষ্ণ মরুভূমিতে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রধান প্রক্রিয়াটি হল-
ক. লবণ কেলাস গঠন
খ. তুষার খণ্ডীকরণ
গ. ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
ঘ. প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরণ
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. জারণ প্রক্রিয়ায় কোন গ্যাসীয় উপাদান প্রয়োজন হয়? (এক কথায় উত্তর দাও)
উত্তর : অক্সিজেন।
২. অঙ্গারযোজন প্রক্রিয়ায় শিলায় মরচে পড়ে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
উত্তর : মিথ্যা
৩. আবহবিকারের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ফল হল—এটি মৃত্তিকা সৃষ্টিতে সাহায্য করে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
উত্তর : সত্য
৪. চিলেশন এক ধরনের জৈব রাসায়নিক আবহবিকার। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
উত্তর : সত্য
৫. থর মরুভূমিকে আবহবিকারের কোন প্রক্রিয়া অধিক কার্যকরী? (এক কথায় উত্তর দাও)
উত্তর : ক্ষুদ্রকণা বিশরণ।
৬. ক্ষয়ীভবনের ওপর জলবায়ুর প্রভাব খুব বেশি। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
উত্তর : সত্য
৭. আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট শিলাচূর্ণের আস্তরণকে রেগোলিথ বলে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
উত্তর : সত্য
৮. নগ্নীভবনে শিলাস্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
উত্তর : সত্য
৯. দ্রবণ যান্ত্রিক আবহবিকারের একটি প্রক্রিয়া। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
উত্তর : মিথ্যা
১০. জল, তুষার কেলাসে পরিণত হলে আয়তনে ______ যায়। (শূন্যস্থান পূরন করো)
উত্তর : বেড়ে
১১. শস্যের শিকড় দ্বারা জমি আচ্ছাদন করে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করার পদ্ধতিকে কী বলে? (এক কথায় উত্তর দাও)
উত্তর : মালচিং (mulching)।
১২. কোন ধরনের আবহবিকারের ফলে মরুভূমিতে বিকেলের দিকে গুলি ছোড়ার মত শব্দ শুনতে পাওয়া যায়? (এক কথায় উত্তর দাও)
উত্তর : ক্ষুদ্রকণা বিশরণ।
১৩. ঋতুভেদে বৃষ্টিপাত যান্ত্রিক আবহবিকারে সহায়তা করে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
উত্তর : সত্য
১৪. কোন আবহবিকারের ফলে শিলায় মরচে পড়ে? (এক কথায় উত্তর দাও)
উত্তর : জারণ।
১৫. আবহবিকারের গুরুত্বপূর্ণ ফল হল ______ সৃষ্টি। (শূন্যস্থান পূরন করো)
উত্তর : মৃত্তিকা
১৬. নিরক্ষীয় অঞ্চলে ______ আবহবিকার বেশি দেখা যায়। (শূন্যস্থান পূরন করো)
উত্তর : রাসায়নিক
১৭. যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হিউমাস তৈরি হয় তাকে কী বলে? (এক কথায় উত্তর দাও)
উত্তর : হিউমিফিকেশন।
১৮. পর্বতের ঢালে আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট শঙ্কু আকৃতির শিলাচূর্ণকে কী বলে? (এক কথায় উত্তর দাও)
উত্তর : ট্যালাস।
১৯. কৃষিকার্যের মাধ্যমে জৈব আবহবিকার ঘটায় ______। (শূন্যস্থান পূরন করো)
উত্তর : মানুষ
২০. শিলাস্তরের চাপ হ্রাসজনিত যান্ত্রিক আবহবিকারের কারণে শিলাস্তর খণ্ডবিখণ্ড হলে তাকে কী বলে? (এক কথায় উত্তর দাও)
উত্তর : সিটিং (sheeting)।
টিকা লিখো
১. আবহবিকার (Weathering)
উত্তর : আবহাওয়ার অন্তর্গত বিভিন্ন উপাদান, যেমন –উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, তুষারপাত প্রভৃতির দ্বারা যান্ত্রিকভাবে শিলা বিচুর্ণীকৃত হলে কিংবা অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, জল প্রভৃতির দ্বারা রাসায়নিকভাবে শিলা বিয়ােজিত হলে, তাকে আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন বলে।
বৈশিষ্ট্য : আবহবিকারে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলা বিচুর্ণীকৃত বা বিয়ােজিত হয়। বিচুর্ণীকৃত বা বিয়ােজিত পদার্থগুলি মুল শিলার কাছাকাছি পড়ে থাকে।
উদাহরণ : ক্ষুদ্রকণা বিসরণ, প্রস্তরর্চাই খণ্ডীকরণ, শঙ্কমােচন (যান্ত্রিকভাবে সৃষ্ট), অঙ্গারযােজন, জারণ, আবিশ্লেষণ(রাসায়নিকভাবে সৃষ্ট) প্রভৃতি প্রক্রিয়ায় আবহবিকার সংঘটিত হয়।
২. যান্ত্রিক আবহবিকার (Mechanical Weathering)
উত্তর : উয়তার তারতম্য, উয়তা ও শুষ্কতার পার্থক্য, শিলাস্তরে চাপের প্রভেদ, তুষার ও লবণের কেলাস গঠন, জৈবিক কার্যকলাপ ইত্যাদির প্রভাবে শিলাসমুহ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে সেই স্থানে অবস্থান করলে, তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে শিলার ভৌত পরিবর্তন হয় কিন্তু কোনো রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না অর্থাৎ শিলা উপাদানের নিজস্ব ধর্ম অক্ষুন্ন থাকে।
প্রক্রিসমূহ : যান্ত্রিক আবহবিকার প্রধানত পাঁচটি পদ্ধতিতে ঘটে থাকে, যথা-
i. তাপের প্রভাবে শিলার সংকোচন ও প্রসারণ,
ii. কোসন প্রক্রিয়া,
iii. চাপমোচনের ফলে প্রসারণ,
iv. কলয়েভীর উৎপাটন এবং
v. বৃষ্টিপাত ও আর্দ্রতার প্রভাবে যান্ত্রিক আবহবিকার।
৩. হিউমাস (Hunus)
উত্তর : উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহাবশেষ মৃত্তিকার উপরিস্তরে জৈব পদার্থরূপে সঞ্চিত হয়। ওই সব পদার্থ মৃত্তিকাহিত আণুবীক্ষণিক জীব দ্বারা বিয়ােজিত হয় এবং তা ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে এক জটিল কালাে বর্ণের পদার্থ সৃষ্টি করে, একে হিউমাস বলে। হিউমাসসমৃদ্ধ মাটি খুব উর্বর ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন হয়। এই ধরনের মাটির জলধারণ ক্ষমতাও খুব বেশি। কিন্তু, হিউমাস মাটিতে দীর্ঘদিন থাকতে পারে না। এটি ধীরে ধীরে খনিজ পদার্থে রূপান্তরিত হয়ে মাটিতে মিশে যায়। হিউমাস সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে হিউমিফিকেশন ব্ৰলে।
৪. রেগােলিথ (Regolith)
উত্তর : মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রথম পর্যায়ে আদি শিলা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকারের ফলে চূর্ণবিচূর্ণ হয়। এই শিলাচূর্ণ ভূত্বকের উপর শিথিল ও কোমল একটি আবরণ সৃষ্টি করে। একে রেগােলিথ বলে। রেগােলিথই মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায় ও প্রধান শর্ত। কালক্রমে বিভিন্ন জৈবিক, রাসায়নিক ও জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্লেগােলিথের সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণগুলি বিশ্লিষ্ট ও স্তরীভূত হয়ে মৃত্তিকা সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে, ব্রেগােলিথ হল আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট যাবতীয় বস্তুভারের অসমৃদ্ধ স্তর। এই বস্তুটি শিলাচূর্ণ ও মৃত্তিকার মাঝামাঝি অবস্থা।
উদাহরণ : পর্বতের পাদদেশীয় ঢালে সঞ্জিত ট্যালাস, স্ক্রি ইত্যাদি হল রেগােলিথ জাতীয় পদার্থ।
৫. পুঞ্জিতক্ষয় (Mass Wasting)
উত্তর : আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট বিয়ােজিত ও চূর্ণবিচূর্ণ শিলাখণ্ড, মৃত্তিকা প্রভৃতি পুঞ্জাকারে পিচ্ছিল তলের মাধ্যমে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে দ্রুত বা ধীরভাবে নীচে নেমে আসার সময় ভূ-গাত্রে যে ক্ষয় হয়, তাকে পুঞ্জিতক্ষয় বলে।
বৈশিষ্ট্য : গাছের গােড়ার বক্রতা দেখে পুতিক্ষয়ের গতি বােঝা যায়, ও পার্বত্য অঞলে পুতিক্ষয় প্রায়ই হয়, ও জল পুঞ্জিতক্ষয়ে সহায়তা করলেও পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে না।
উদাহরণ : ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞলে পুঞ্জিতক্ষয় প্রচুর পরিমাণে সংঘটিত হয়।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর
১. রেগােলিথ মাটি নয় কেন?
উত্তর : সময়ের সঙ্গে পরিণত পর্যায়ের শেষে আবহবিকারজাত সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণের সঙ্গে খনিজদ্রব্য, জৈবপদার্থ, জল ইত্যাদি মিশে মাটি তৈরি হয়। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে আবহবিকারের ফলে শিলা বিচূর্ণীভূত হয়ে রেগােলিথ সৃষ্টি হয় যা ভূত্বকের উপর পাতলা, কোমল ও শিথিল আস্তরণরূপে বিরাজ করে। এদের বিশেষ কোনাে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম থাকে না। তাই রেগােলিথকে মাটি বলা যায়না। এজন্য যান্ত্রিক আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট পর্বতের পাদদেশীয় ঢালে সঞ্জিত ট্যালাস বা স্ক্রি-কে মাটি বলা যায় না।
২. সমােন্নতি শস্যায়ন (Contour farming) কাকে বলে?
উত্তর : শস্য চাষের জন্য মালভূমি বা পার্বত্য অঞ্চলের ঢালু জমিতেসমােন্নতি রেখা বরাবর আল ও নালা (Ridge) তৈরি করা হয়। এর ফলে শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টির জল আলে বাধা।পেয়ে মৃত্তিকায় অনুপ্রবেশ করে এবং অধিক বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত জল নালার মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে যায়, এই শস্যায়নকে সমােন্নতি শস্যায়ন বলে। ঢালু জমিতে মৃত্তিকাকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করার অন্যতম পদ্ধতি হল এই সমােন্নতি শস্যায়ন।
৩. সােলাম কী?
উত্তর : ইংরাজি ‘Soi৷’ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘So-lum’ (সসালাম) থেকে, যার অর্থ ভূমি বা মেঝে (Floor)। আবহবিকারের ফলে আদি শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যে রেলগালিথের সৃষ্টি হয় তার উপরিভাগের যে মৃত্তিকা স্তর থেকে উদ্ভিদ খাদ্য সংগ্রহ করে তাকে সসালাম বলে। এককথায় মৃত্তিকার E ও B স্তরকে একত্রে সােলাম বলে।
বৈশিষ্ট্য ; অপরিণত মাটিতে সােলাম গঠিত হয় ।কেবলমাত্র পরিণত মাটিতেই সােলাম গঠিত হয়। এটি উদ্ভি ছােটো প্রাণী ও জীবাণুকুলের আবাসস্থল। এটি মৃত্তিকার জৈরসায়নাগার হিসেবে কাজ করে।
৪. কাস্ট ভূমিরূপ কাকে বলে?
উত্তর : চুনাপাথরযুক্ত অঞলে ভৌমজলের কার্যের ফলে যে বিশেষ ধরনের তুমিনুপের সৃষ্টি হয়, তাকে কার্ট ভূমিরূপ বলে। সাধারণত কার্বনেশন প্রক্রিয়া জল, বাতাসের কার্বন ডাইন্যাইড চুনাপাথরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যালশিয়াম বাইকার্বোনেট উৎপন্ন করে এই প্রকার ভুমিরুপ গঠন করে।
৫. স্ক্রি বা ট্যালাস কাকে বলে ?
উত্তর : শীতপ্রধান পার্বত্য অঞলে যান্ত্রিক আবহবিকারের মাধ্যমে শিলাস্তর ফেটে টুকরাে টুকরাে অসংখ্য কোণবিশিষ্ট প্রস্তরখণ্ডের সৃষ্টি করে। এই কোণবিশিষ্ট প্রস্তরখণ্ডগুলি উল্লম্বভাবে পর্বতগাত্রে অবস্থান করলে তাকে, স্ক্রি বা ট্যালাস বলে।
৬. নগ্নীভবন কাকে বলে?
উত্তর : আবহবিকার, কয়ীভবন এবং পুঞ্জিতক্ষয়ের সম্মিলিত প্রভাবে শিলাস্তরের উপরিভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অপসারিত হলে অভ্যন্তরভাগ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এভাবে শিলাস্তরের ভিতরের অংশ ভূপৃষ্ঠে উন্মুক্ত হলে, তাকে বলা হয় নগ্নীভবন। সুতরাং, নগ্নীভবন হল আবহবিকার, ক্ষয়ীভবন ও পুঞ্ছিতক্ষয়ের সম্মিলিত ফল।
►► আরো দেখো: ভুগোল সকল অধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তর
পশ্চিমবঙ্গের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, এখানে আমরা শুধু প্রশ্নগুলো আলোচনা করেছি। তোমরা চাইলে পিডিএফ ফাইলে নবম শ্রেণীর ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর সহ ডাউনলোড করতে পারো। এজন্য ওপরে দেওয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করো।
ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলটি SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।